ঢাকা    বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
শিরোনাম


প্রচ্ছদ » বরিশাল » পটুয়াখালী ও বরগুনায় তেল বীজ উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

পটুয়াখালী ও বরগুনায় তেল বীজ উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের


জিতেন্দ্র নাথ রায়,বাউফল( পটুয়াখালী )
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪


 পটুয়াখালী ও বরগুনায় তেল বীজ উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

পটুয়াখালী: দাম বৃদ্ধির কারনে বাজারের ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী ও বরগুনার কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। গত ৩ বছরে তেল বীজের উৎপাদন পটুয়াখালীতে ৩৮ শতাংশ ও বরগুনায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে পটুয়াখালীতে ১০ হাজার ৬৭৯ হেক্টর জমিতে তেল বীজের চাষ হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৭ হাজার ৮১২ হেক্টর ও ২০২২ সালে ৬ হাজার ৮৯১ হেক্টরে চাষ হয়। অপরদিকে, বরগুনা জেলায় এ বছর ৫ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমিতে তেল বীজ উৎপাদন হয়েছে। ২০২৩ সালে ৫ হাজার ৩৫ হেক্টর ও ২০২২ সালে ২ হাজার ৩৫ হেক্টরে তেলবীজ চাষ হয়।

এছাড়াও, পটুয়াখালীতে এবার চিনাবাদাম আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৯৪৬ হেক্টরে, সুর্যমুখী ২ হাজার ১০০ হেক্টর, সরিষা ৪৮০ হেক্টর, তিল ১৩৪ হেক্টর ও সয়াবিন ১৯ হেক্টর। বরগুনায় এবার সুর্যমুখী আবাদ হয়েছে ৩,৯৫৩ হেক্টরে, চিনাবাদাম ৯৪৭ হেক্টর, সরিষা ৬০২ হেক্টর, তিল ২১ হেক্টর ও সয়াবিন ৫ হেক্টর।

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার গছানী গ্রামের কৃষক কাজী আনিচুর রহমান চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এতে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা কারন উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে বীজ বিনামূল্যে বীজ পেয়েছেন। ফলন ভালো হয়েছে। এবার তিনি কমপক্ষে ৩০ মণ সুর্যমুখীর ফল পাবেন বলে আশা তার। প্রতিমণ তিনি ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। এতে প্রায় এক লাখ টাকা আয় হবে তার।

আনিচুর রহমান বলেন, আমি বাজারের ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে ২০২২ সাল থেকে সুর্যমুখী, সরিষাসহ তেলবীজ চাষ করছি। সারা বছরের তেলের চাহিদা পূরণ করে বাজারে বিক্রি করে আর্থিক লাভবান হচ্ছি। এখন আমাকে বাজার থেকে ভোজ্য তেল কিনতে হয়না। ৫ সদস্য‘র পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রিও করতে পারি।

দশমিনার উপ-সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রবি সাইফুল বলেন, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে অনেক কৃষকই এখন সুর্যমুখীসহ নানা ধরনের তেল বীজ চাষে আগ্রহী। গত বছর দশমিনায় মাত্র ৪২ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখীর চাষ হলেও এ বছর ৯০ গেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। তেল বীজের মধ্যে সুর্যমুখী বেশি লাভজনক কারন এতে তুলনামুলক বেশি তেল পাওয়া যায়। প্রতি কেজি সুর্যমুখীতে ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। সরিষার বীজে ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়।

বরগুনার তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের কৃষক ইউসুফ হাওলাদার বলেন, আমি ১৪ বছর ধরে সুর্যমুখী, সরিষার চাষ করি। গত বছর আমি ৬ বিঘা জমিতে সুর্যসুখীর চাষ করে এক লাখ টাকা বিক্রি করেছি। আমার ৮ সদস্যের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আমি তেল বা তেল বীজ বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি।

পটুয়াখালীর কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম ক্রমশ বাড়ছে। এ কারনে বাজারের তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে তেলবীজ উৎপাদনে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। কৃষকরাও তাদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত তেল বা তেলবীজ বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বদরুল আলম জানান, তেলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। কৃষকদের উদ্বুদ্দকরণ ছাড়াও কৃষকদের সার-বীজসহ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে এতে কৃষকরাও তেলবীজ চাষে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও পটুয়াখালীতে বেসরকারি উদ্যোগেও তেলবীজ হিসেবে সুর্যসুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পল্লীী প্রগতি সমিতির উদ্যোগে ‘রুরাল মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ ট্রান্সফরমেশন প্রকল্পের অধীনে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নে বদরপুর, আউলিয়াপুর, ছোটবিঘাই ও জৈনকাঠীতে ১০০ বিঘা জমিতে এ বছর সুর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে।
পল্লী প্রগতি সমিতির উপ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন জানান, এ প্রকল্পের অধীনে সুর্যমুখী বীজ থেকে তেল উৎপাদনের জন্য পটুয়াখালীর শহরে দু‘টি অত্যাধুনিক মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি কেজি সুর্যমুখী ৩০ টাকা ও সরিষা ২০ টাকা হারে ভাঙ্গানোর সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকরা।

এনএন

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪১:১২   ৮৭ বার পঠিত  |   







বরিশাল থেকে আরও...


সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংস ঝুঁকিতে লোহালিয়া পাড়ের বনভূমি
কাউখালীতে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ
কাঁঠালিয়ায় তিনদিন ব্যাপি কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধণ
প্রফেসর ড.শফিকুল ইসলাম মোল্লা এলটি বরিশাল বিভাগে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত
সড়কে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই নির্মাণকাজ শেষ



আর্কাইভ