ঢাকা    সোমবার, ২০ মে ২০২৪
শিরোনাম


প্রচ্ছদ » ঢাকা » সালথায় চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার হিড়িক, যেন দেখার কেউ নেই!

সালথায় চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার হিড়িক, যেন দেখার কেউ নেই!


সাইফুল ইসলাম,সালথা ( ফরিদপুর )
প্রকাশ: শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪


 সালথায় চলছে ফসলি জমির মাটি কাটার হিড়িক, যেন দেখার কেউ নেই!

ফরিদপুর: সালথায় অবৈধ ভাবে সোনালি আঁশ পাট, পেঁয়াজ ও আমন ধানের উর্বর জমির মাটি কাটার হিড়িক পড়েছে। দিনে ও রাতের আঁধারে এসব ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। গত ৩ থেকে ৪ মাস ধরে অতিমাত্রায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি বেড়ে গিয়েছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে ব্যবস্থা নিলেও কোন মতেই বন্ধ হচ্ছে না ফসলি জমির মাটি কাটা।

প্রতি বছর এই উপজেলায় শত একর ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। এ কারণে দিন দিন আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা। এসব যেন দেখার কেউ নেই।

বিক্রিত মাটিগুলো বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ ট্রলি গাড়ী। এই অবৈধ ট্রলি গাড়ীর তান্ডবে ধ্বসে যাচ্ছে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাঁচা পাকা রাস্থাগুলি। অতিরিক্ত ট্রলিগাড়ী চলায় কাঁচা রাস্থাগুলোতে সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদার সৃষ্টি হয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। মাটি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে সালথা উপজেলায় কয়েটি শক্তিশালী মাটি ব্যবসায়ী চক্র গড়ে উঠেছে। এরাই তিন ফসলি জমি ধ্বংস করে মাটি বিক্রির ব্যবসা করছে। ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় ও গৃহস্থদের কাছে বিক্রি করছে। ইটভাটার মালিকরা দালালের মাধ্যমে সাধারণ কৃষককে লোভে ফেলে ফসলি জমির মাটি ক্রয় করছেন। আবার কেউ কেউ লোভে পড়ে নগদ টাকার আশায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। ৮-১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে অনেক জমিই ডোবায় পরিণত হয়েছে। এখানে না হচ্ছে ফসল, আবার না চাষ করা যাচ্ছে কোন ধরনের মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ, লাভবান
হচ্ছে কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। এদিকে মাটি ব্যবসায়ীরা বলছেন আমরা বিভিন্ন জায়গায় টাকা-পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করেই মাটির ব্যবসা করছি।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে যদুনন্দি ইউনিয়নের খাড়দিয়া গ্রামের অবুজ মিয়া খাড়দিয়া এলাকার বিভিন্ন ফসলি জমির মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে ট্রলিতে করে পাঠাচ্ছেন ইটভাটায়। এছাড়া তিনি ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়া গ্রাম থেকে ফসলি জমির মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে ট্রলিতে করে চড়া দামে মাটি বিক্রি করছেন
বিভিন্ন জায়গায়। প্রতিটি জায়গা থেকে মাটি পরিবহনের কাজে তিনি ব্যবহার করছেন ৮-১০টি করে ট্রলি। এতে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কাঁচা পাকা রাস্থাগুলি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অপরদিকে একই ইউনিয়নের খাড়দিয়ার সাধুহাটি গ্রামে রিপন ফকির নামে আরেক ব্যক্তি প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে ফসলি জমির মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে ট্রলিতে করে বিক্রি
করে আসছে।

ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছেন নুরুল ইসলাম নামে এক ইউপি সদস্য। তিনি ভাওয়াল ইউনিয়নের কামদিয়া থেকে রাতের আঁধারে পরিবেশ আইন অমান্য করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ৫-৬টি ট্রলিতে করে চড়া দামে বিক্রি করছেন গৃহস্থদের কাছে। এ জমির চারপাশে সোনালী আঁশ পাটের চারা বেড়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না।

এদিকে ভাওয়াল ইউনিয়নের নারানদিয়ায় সাহেব আলী, মাঝারদিয়া ইউনিয়নের খলিশপট্টিতে শানাল, ও রাসেল, বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইলে সুজন, সোনাপুর ইউনিয়নের মিনাজদিয়ায় মুরাদ ও সিরাজ, গট্টি ইউনিয়নে সাখাওয়াতসহ আরো রড় রড়
মাটি ব্যবসায়ীরা উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ভেকু ও ট্রলিগাড়ী দিয়ে নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন মাটির ব্যবসা।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, অবৈধ ভাবে ফসলি জমি কেটে মাটি বিক্রির খবর পেলেই আমরা সেখানে ছুটে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করি। ইতোপূর্বে একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে এবং নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অবৈধ ভাবে মাটি কাটার বিরুদ্ধে আমাদের এই অভিযান অব্যহত থাকবে।

এনএন

বাংলাদেশ সময়: ০:২৮:৩৯   ৯০ বার পঠিত  |      







ঢাকা থেকে আরও...


ফরিদপুর চিনিকলে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
নরসিংদীতে পুকুর থেকে নিখোঁজ নারীর মরদেহ উদ্ধার
সালথায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াদুদ মাতুব্বরের প্রার্থিতা বহাল
সিংগাইরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ব্যবসায়ী নিহত
সালথা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক প্রার্থী কোর্টে অপর প্রার্থী ভোটের মাঠে



আর্কাইভ