ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম
![]()
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দী ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি ও নুরজাহানপুর গ্রামে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রামের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিগুলিতে একজন নিহত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।গতকাল রবিবার (০২/১১) সকালে ঢাকায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিপন (২৮)নামে এক যুবক মারা যায়।
গত শনিবার (০১/১১)সন্ধ্যাায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ দশজন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধরা হলেন হোটেলের দুই কর্মচারী মো. ইয়াছিন (২০), মো. নূর আলম (১৮), ও মো. এমরান মাস্টার (৪২)।
গুলিবিদ্ধ আহতদের নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর এক পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর এর ঘটনা ঘটায় । হামলার খবর পেয়ে রাতেই নবীনগর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক ও নবীনগর থানার ওসি শাহীনূর ইসলাম সহ সেনাবাহিনী ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুরো এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির মৃত্যুর খবরে পুনরায় সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার ভয়ে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রেফতার আতংকেপুরো গ্রামটি এখন পুরুষ শুন্য হয়ে পরেছে।
জানা যায়, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দির তালতলা মোড়ে নুরজাহানপুর গ্রামের মনেক ডাকাতের গ্রুপ ও থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান মাস্টারের গোষ্ঠীর চাচাতো ভাই আরাফাতের গ্রুপের মধ্যে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার ও এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘ ধরে বিরোধ চলে আসছিল।তারই জের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিবরনে জনা যায়, বড়িকান্দি গণি শাহ বাজারে স্থানীয় একটি হোটেলে রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে এলাকার মনেক মিয়া ছেলে শিপন মিয়া (৩০) আড্ডা দিচ্ছিল। ওই সময় আচমকা প্রতিপক্ষ এমরান মাষ্টার গোষ্ঠীর চাচাতো ভাই থোল্লাকান্দি গ্রামের মিষ্টারের ছেলে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হোটেলটিতে গুলি করতে করতে ঢুকে।
এসময় শিপন মিয়া (৩০) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন (২০) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হয়। গুলির আওয়াজে পুরো বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গুলি করার পর সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে চলে যায়। মনেক মিয়ার ছেলে শিপন গুলি খাইছে, একথা তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী গ্রাম নূরজাহানপুরে ছড়িয়ে পড়লে, মনেকের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় গণিশাহ মাজারের অদূরে তালতলায় গিয়ে স্থানীয় এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে হামলা চালায়।
এসময় মনেকের সশস্ত্র লোকজনের ছোঁড়া গুলিতে এমরান মাস্টার (৩৮) গুলিবিদ্ধ হন। বিক্ষুব্ধ সশস্ত্র লোকজন এরপর থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করে। পাল্টাপাল্টি এ গুলাগুলির ঘটনার পর পুনরায় সংঘর্ষ ও হামলার ভয়ে পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান মাষ্টার বড় ভাই বিল্লাল হোসেন বলেন,আমার ভাই এলাকার কোন কিছুর সাথেই জড়িত নয়,আমিও এলাকায় থাকি না,যতটুকু জানতে পেরেছি মনেক গ্রুপের আভ্যন্তরিন দ্বন্ধেই এ ঘটনা। আরাফাত আমাদের গ্যাতিগোষ্ঠীর হলেও মূলত মনেকের লোক। আর এ কারণেই এমরান মাস্টারের অফিসে গিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে গুলি করে।
এ ব্যাপারে মনেক ও পরিবারের একাধিক লোকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে এসপি স্যার, সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ ফোর্সসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পক্ষে মামলা না করা হলে প্রয়োজনে পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলা হবে।
আর/ এন
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪১:৫৩ ৫১৮ বার পঠিত | ● আধিপত্য ● নবীনগর ● নিহত ● সংঘর্ষ